ভুঁইফোড় শিল্পী

 হেঁ কাকা তুমি ত জানো
আমি টুকুটাকু ঝুম্যুর গান লেখি আর সুর দিই
কিন্তু যা দেখছি আর শুনছি
তাতে ত চ’খ আমার চড়ক গাছ্যে উঠ্যে যাছ্যে!
একবার কর‍্যে মনে হছ্যে সব কিছু ছাড়্যে –
ঘর ভিতরে কানে তুলা গুঁজ্যে বস্যে থাকি

কইলকাতার কিছু ফ্যচকা ছে’লা মায়া পুরল্যার ঝুম্যুর গুলান
উলটায় পালটায় কালি ছিটাই নাম কামাই কর‍্যে খাছ্যে।
আর হাততালি? সে আর কি বলব কাকা –
হাত তালিতে গর্বে বুকটা ভর‍্যে যাবার কথা,
কিন্তুক চখ্যের জলে বুক ট ভাস্যে যাচ্ছ্যে।
পুরুল্যার লোকগানকে ডুবাই ছাড়ছ্যে যে কাকা
দেখছ্য নাইখ – শালারা ছাগল লাদাড়িকে
ছাগল দাড়ি বল্যেই চালাই দিছ্যে!


আর সেই গান ট শুন নাই –
যেটা এখন হাটে বাজারে সবার মুখে মুখে ঘুরছ্যে
“কাল জলে কুচল্যা তলে ডুবল সনাতন
আজ সারানা কাইল সারানা পাইনা দরশন”
ছিঃ ছিঃ কাকা ছিঃ ছিঃ –
ইহারা শিল্পী লয়। শিল্পীর কলঙ্ক বটে
সারানা সারানা কর‍্যেই  পা’র কর‍্যে দিছ্যে
কোনো মানে নাই, অর্থ নাই।
কেউ কেউ ত বলছ্যে
‘আইজ চার আনা কাল চার আনা পাই যে দরশন’
আমার কি মনে হছ্যে জানো কাকা
ই সব শুনার থাক্যে মর‍্যে যাওয়া ভালো!
তুমি ত জানো কাকা আসল গান ট কি রকম-
“আলো জ্বলে কুচল্যা তলে ডুবল সনাতন
আইজ সারাদিন কাইল সারাদিন পাইনা দরশন”।


পুরুল্যা উঠল্য ন ফুটল্য
কারো কনহ যায় আসেনা কাকা।
দেখল্যে নাই, কদিন আগে
সরকার একট মদ বাজারে ছাড়্যে
নাম দিয়ে দিলেক – ‘ঝুম্যুর’!
বলি কন বউকে বলব্য ভালো,
ভাত বসায়্যে হাগত্যে গেল।


কথায় কথা বাড়্যে কাকা
আর না বলল্যেও রইতে লারি
কিছু কিছু লোক ত এখন ব্যবসা ফাঁদ্যে বসেছ্যে,
লিজে কবিতার ক টি পর্যন্ত জানে নাই
তবু ই বই সে বই থাক্যে টুকলি কর‍্যে
বই প্রকাশ করে নাম রাখছ্যে
‘আঞ্চলিক ভাষার আবৃত্তির কবিতা’
আর দাম রাখছ্যে – ছশ আটশ!
কিন্তু এই ব্যবসা ত বন্ধ করত্যে হবেক কাকা
দেখল্যে নাই তুমার আমার সকলের প্রতিবাদেই
মদের নাম ট সরকার হড়বড়ায়্যে বদল করল্য
তেমনি আমাদের গান – আমাদের সুর
আমাদের ভাষা – আমাদের লাচ
আমার গরব বটে – অহংকার বটে।
আর সেই অহংকারকে যারা কালি মাখায়্যে
আমাদের সমসকিতিকে যারা অপমান করছ্যে
তাদের মুহে ঝাঁটা মার‍্যে, মাথা ট নাড়হা কর‍্যে
ঘোল ঢাল্যে খালি পায়ে রাস্তায় ঘুরাত্যে হবেক।  
তা না হল্যে আমাদের গরব আমাদের অহংকার
সব ধুলায় মিশে জাবেক কাকা।
পুরুল্যা ট কখনো আগু দিকে আগাবেক নাই
পিছন দিকে পড়্যে ধুলায় লটপটাব্যেক!